গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করতে পূর্তকাজের অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জাদুঘরে রূপান্তরের কার্যক্রম সমাপ্ত করতে নির্মাণ বা সংস্কারকাজ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে করবে পূর্ত মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় হবে ১১১ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
আজ মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।এর আগে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও বিগত সরকারের ১৬ বছরের নিপীড়নের বিভিন্ন ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরতে গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হয়।
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের আগেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের অনেক কাজ এগিয়ে নেয় সরকার। ইতিমধ্যে সেখানে বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণও করা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, জাদুঘরের কাজের মধ্যে থাকবে ইএম অংশ। ইএম বলতে বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক অংশকে বোঝানো হচ্ছে। এর মধ্যে থাকবে বৈদ্যুতিক তার, সুইচসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিকসামগ্রী। আরও থাকবে পূর্ত অংশ। এর মধ্যে থাকবে বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক অংশ বাদে অন্য সব।
জাতীয় সংসদের উত্তর কোণে অবস্থিত গণভবনে বসবাসকারী একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সরকারপ্রধান হিসেবে এখানেই ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সংস্কারকাজ সম্পন্ন হলে ২০১০ সালে পরিবারসহ গণভবনে ওঠেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল তাঁর ঠিকানা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ৫ আগস্ট জাদুঘর উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই সময়ের মধ্য জাদুঘরের ইএম অংশ নির্মাণ অথবা সংস্কার করা সম্ভব হবে না। এ জন্য এই নির্মাণ বা সংস্কারকাজ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে করা হবে। মেসার্স শুভ্রা ট্রেডার্সকে দিয়ে এই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত বিভাগ। এর জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪০ কোটি ৮২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
জাদুঘরের ইএম অংশ নির্মাণ বা সংস্কারকাজ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে করার জন্য বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল অংশের কাজ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অবলম্বন করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘দি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে’ দিয়ে এই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত বিভাগ। এর জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭০ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।