দেশের বহুল আলেচিত ও নিন্দিত ঘটনা , ই-কমার্স প্রতারণার অন্যতম ‘ই-অরেঞ্জের’ সিইও এবং ঢাকা জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আমানুল্লাহ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (২৭ জুন) বিমানবন্দর থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমানুল্লাহ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য ,গত ৫ অগস্টের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা ও আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন ছাড়াও দেশজুড়ে আলোচিত ই-অরেঞ্জ প্রতারণা মামলার মূলহোতা হিসেবে পরিচিত।
আমানুল্লাহ চৌধুরী ই-অরেঞ্জ নামের একটি হায় হায় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ১শ’ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ৫৪টি মামলা রয়েছে। প্রতারণা মামলায় একাধিকবার জেল খাটলেও বর্তমানে তিনি জামিনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে ছিলেন।
বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, শুধু প্রতারণা নয়, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবেও পরিচিত। ২০২৪ সালের জুলাই মাস জুড়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালীন সময় এই আমানুল্লাহ চৌধুরী ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার আওয়ামী যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অর্থ সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, আইটিতে এক্সপার্ট আমানুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র অন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণায়ও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলো।
সূত্র জানায়, তার এ্যালিফেন্ট রোডের অফিসে তৎকালীন আইএস পিআর এর আওয়ামী সরকার ঘনিষ্ঠ একদল অফিসারের সহযোগিতায় 'শেখ হাসিনাতেই আস্থা' নামক একটি প্রচার সেল গঠন করা হয়, যাদের ২৪ ঘন্টার কাজ ছিলো ছাত্রজনতার আন্দোলন বিরোধী প্রচার প্রচারণা চালানো।
তদন্তে উঠে এসেছে, ই-অরেঞ্জের ১,১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমান উল্লাহ তৎকালীন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের ছত্রছায়ায় পরিকল্পিতভাবে জেলে থাকার নাটক করেন। উদ্দেশ্য ছিল, জনসচেতনতা ও তদন্তকে বিভ্রান্ত করে আত্মসাৎকৃত অর্থ গোপন করা।
জানা যায়, আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বৈষম্য বিরোধী মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা জানান, আমান উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হবে।
আ. দৈ./ কাশেম