বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫,
২৯ কার্তিক ১৪৩২
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
আইন-আদালত
সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত
বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে ২০ জনের ফাঁসি
Publish: Saturday, 3 May, 2025, 2:35 PM  (ভিজিট : 172)

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। ওই হত্যা মামলায় হাইকোর্টের প্রকাশিত রায়ে বিচারিক আদালতের ঘোষিত আগের রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন। সম্প্রতি ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

দেশের বহুল আলোচিত ও নির্দনীয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড  রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এরপর গত বছর ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।

বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন আবরার ফাহাদ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন তিনি। ওই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সে সময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল বুয়েটসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। 

সেইসঙ্গে প্রতিবাদ বিক্ষোভে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল তখনকার ফ্যাসিস্ট সরকার। এ ঘটনার জের ধরেই তীব্র আন্দোলনের মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

আবরার ফাহাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ওই ঘটনার পর যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল, ঘটনার দিনই কুষ্টিয়ার বাড়ি থেকে বুয়েটে এসে শেরে বাংলা হলে নিজের ১০১১ কক্ষে এসেছিলেন আবরার। ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি পোস্টের জের ধরে রাত ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। 

পরে রাত ৩টার দিকে জানা যায় যে আবরারকে হত্যা করে একতলা ও দোতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি ফেলে রাখা হয়েছে। পরে জানা যায় আবরারকে ‘শিবির আখ্যা’ দিয়ে দুই দফায় দুটি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয় এবং পরে বুয়েট মেডিকেলের ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর মধ্যে খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে টহল পুলিশের একটি দল হল গেটে গেলে তাদের হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। 

পরে চারটার দিকে পুলিশ আবার হলে যায়। এরপর ডাক্তার মৃত ঘোষণার পর তারা মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় যে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম ওরফে তানভির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মো. মিজানুর রহমান মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মোর্শেদ ওরফে অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (পলাতক), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল ওরফে জিসান (পলাতক), মুজতবা রাফিদ (পলাতক)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মো. মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা।

নিম্ন আদালতের রায় খতিয়ে দেখতে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। এটাকেই ডেথরেফারেন্স বলা হয়। পরে কারাবন্দি আসামিরা জেল আপিল করেন। পাশাপাশি অনেকে ফৌজদারি আপিলও করেন।

 বিগত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আবরার ফাহাদের নাম ফের আলোচনায় আসে। শিক্ষার্থীদের কাছে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে আবরার ফাহাদের নাম জায়গা করে নেয়। শিক্ষার্থীরা তার নামেও সে সময় স্লোগান দেন। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আববার ফাহাদ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চে এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।

আ. দৈ./কাশেম
   বিষয়:   বুয়েট   শিক্ষার্থী    আবরার হত্যা   মামলায়   হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ    রায়ে ২০ জনের   ফাঁসি   
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

হিরো আলমকে আটক করতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
সেনা কর্মকর্তা সেজে প্রেমের জাল বুনলেন প্রতারক
দেশ ছেড়ে পালিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী আওয়ামী লীগ: এটিএম আজহারুল
হাসিনার সাক্ষাৎকার নিয়ে ঢাকায় ভারতীয় দূত তলব
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরি সরঞ্জাম সহ আটক ৩
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে গ্রেফতার হওয়া আ'লীগ নেতা ফারুক কারাগারে
ডিএনসিসি প্রশাসকের দপ্তরের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ; সম্পাদক উবাইদা
রাজধানীতে ফায়ার সার্ভিসের গেটের পাশে বাসে অগ্নিকাণ্ড
ফরিদপুরে জেলা আ.লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন আটক
আইন-আদালত- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাসুদ আলম
প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik$gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝