আওয়ামী লীগপন্থী স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ও টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের বিতর্কিত অধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১) মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল ) গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১ এর কর্মকর্তা মেজর আহনাফ।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি মিছিলে হামলার ঘটনায় নিহত ও আহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলার পলাতক আসামি ছিলেন আলাউদ্দিন মিয়া। এছাড়াও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, ওইসব নেতাদের সঙ্গে মিলে গোপনে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি।
আলাউদ্দিন মিয়ার সহোদর হেলাল উদ্দিন, যিনি জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত, তিনিও বর্তমানে পলাতক। জাহাঙ্গীর পালিয়ে যাওয়ার সময় টঙ্গীর আউচপাড়ায় আলাউদ্দিন-হেলাল ভাইয়ের বাড়িতে প্রায় ১০ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখে যান বলে দাবি করেছে একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি অধ্যক্ষের পদে নিয়োগ পান এবং এরপর থেকেই টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজে ব্যাপক অনিয়ম, লুটপাট এবং দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের জমি ও মার্কেটের দোকান বিক্রি করে কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন তিনি। নিজে মাসে দেড় লাখ টাকারও বেশি সুবিধা নিলেও শিক্ষকরা পান গড়ে ২৫ হাজার টাকারও কম।
এছাড়া, স্কুলের তহবিল থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ তুলে নিজের সন্তানকে কানাডায় পাঠানোর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ২১টি অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্ত কমিটি গঠন হলেও রহস্যজনক কারণে তদন্ত এখনও প্রকাশ পায়নি।
এদিকে, তার বিরুদ্ধে নিজ প্রতিষ্ঠানেই একাধিক শিক্ষিকা ও অভিভাবিকাদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষক সমাজ ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আ. দৈ./ কাশেম