বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন বিএমসি মুসলিম কমিউনিটি পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমী ‘শাহী ভোজ’। গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি ( শুক্রবার ) পবিত্র জুমার নামাজের পর বিএম কলেজের পরীক্ষা ভবনে অনুষ্ঠিত হয় এই ব্যাতিক্রমী আয়োজন।
মাত্র ২০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি'র বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা এই শাহী ভোজে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই আয়োজনের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যে একটি গরু ক্রয় করা হয়। খাবারের মেন্যুতে ছিল গরুর মাংস, সাদা ভাত, ডাল ও ফিরনি।
শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহের ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই কুপন বিক্রি শেষ হয়ে যায়। আয়োজকরা জানান, প্রথমবারেই এত বিশাল সাড়া পাওয়া তাদের প্রত্যাশার বাইরে ছিল। শিক্ষার্থীরা জানান, মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে এত সুন্দর ও ব্যতিক্রমী আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আয়োজকদের পরিকল্পনা, আগামী বছর এই আয়োজন আরও বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে।
শুধুমাত্র মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, আয়োজকরা সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্যও বিশেষ খাসির আয়োজন রাখেন। এতে বহু সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন এবং আয়োজকদের আন্তরিকতা ও সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন। আয়োজকরা বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারেন।
শাহী ভোজের আগের দিন, বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা ক্রয়কৃত গরুটি নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যা আয়োজনে নতুন মাত্রা যোগ করে। শিক্ষার্থীরা মিছিল করে গরুটিকে অনুষ্ঠানের স্থানে নিয়ে যান, যা পুরো আয়োজনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।আয়োজকরা বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি কথিত ভালোবাসা দিবসের নামে যে অপসংস্কৃতি প্রচলিত রয়েছে, তার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক ও অর্থবহ আয়োজনে সম্পৃক্ত করতেই শাহী ভোজের আয়োজন। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং তাদের আগ্রহ প্রমাণ করে যে, তারা এমন অর্থবহ আয়োজনকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, বিএম কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণও এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন, যা পুরো অনুষ্ঠানের পরিবেশকে আরও মর্যাদাপূর্ণ করে তোলে। শিক্ষার্থীদের মতে, শিক্ষকদের উপস্থিতি এই আয়োজনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিএমসি মুসলিম কমিউনিটির এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্যের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, আগামী বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করা হবে।
আ. দৈ. /কাশেম/ রিফাত