জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে একেবারেই বিকলাঙ্গ করে ফেলেছে । তিনি বলেন, এগুলোকে সংস্কারের মাধ্যমে কার্যকর করতে না পারলে আমাদের ছাত্র-জনতার সকল ত্যাগ বিফলে যাবে। সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াত বরাবরের মতো সংস্কার চায়, আর সেটি অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে।’
আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত জেলার রোকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
জামায়াতের কুষ্টিয়া জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ার্দারের সঞ্চালনায় জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের আব্দুল ওয়াহেদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ রোকন সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ এ কে এম আলী মুহসিন, জামায়াতের মজলিশে শূরা অধ্যাপক ফরহাদ হোসাইন, হাফেজ আব্দুর রফিক প্রমুখ।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ‘রোকনরা হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের খুঁটি, আর এই খুঁটিকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব আমিরের। তাই রোকনদের শক্তিশালী হয়ে দেশের যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান হয়ে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম ও দেশ গড়ার কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রোকনদের শপথের আগে ঈমানের পথে চলার অঙ্গীকার করা হয় আর শপথের পরে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। ঈমানী পথে চলতে গেলে বাধা-বিপত্তি ও সমস্যা আসবেই। পরীক্ষাকে পরীক্ষা মনে করে নিজের জীবনকে পরিচালিত করতে হবে। কোনো রকমের অজুহাত দিলে রোকনিয়াত কমে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পৃথিবী জুড়েই নানান অশান্তি বিরাজমান। তারপরেও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর দেশকে একেবারে অপদার্থ দেশ বানিয়েছিল। মাত্র তিন মাসে দেশকে একেবারেই ভালো করা অসম্ভব। যারা দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল ও অরাজকতা করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে জামায়াতের কঠোর হুঁশিয়ারী। জামায়াত এসব অন্যায়কে সমর্থন করে না এবং সমর্থনযোগ্য নয়। আশা করি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিকতায় আসবে।’
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দেশে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হলে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে আর ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হলে ধর্ম-বর্ণ সকল মানুষ সমঅধিকারের ভিত্তিতে একসাথে বসবাস করতে পারবে।’
সংস্কার না দ্রুত নির্বাচন- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন মতো সংস্কার করতে হবে। কেননা ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রের সকল অর্গানকে (অঙ্গকে) একেবারেই বিকলাঙ্গ করে ফেলেছে। এগুলোকে সংস্কারের মাধ্যমে কার্যকর করতে না পারলে আমাদের ছাত্র-জনতার সকল ত্যাগ বিফলে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী এ দেশের সকল মানুষের একটি জনপ্রিয় দল। জনগণ জামায়াতকে তাদের কার্যক্রমের কারণেই মনে-প্রাণে ভালোবাসে। জামায়াত কোনো লোভ-লালসার বশে নয়, একমাত্র আল্লাহকে খুশি করতেই এ দেশে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চায়। দেশে ইসলাম কায়েম হলে মানুষের মাঝে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে- কোরআন ও হাদিসের আলোকে। মানুষকে তার অধিকারের জন্য কারো কাছে ধরনা দিতে হবে না। আর সেই লক্ষ্যে জামায়াত তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ দেশ ও জাতির কল্যাণকর ভূমিকা রাখার অভিপ্রায়ে একটি ইশতেহার ঘোষণা করবে বলে তিনি জানান। রোকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
আ. দৈ. / কাশেম