আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন এক সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনই নির্ধারণ করবে দেশ গণতন্ত্রের পথে এগুবে, নাকি সেখান থেকে সরে যাবে।
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে আনসার ও ভিডিপির ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তা মহড়া পরিদর্শন এবং ২০২৫–২৬ সালের চতুর্থ পর্যায়ের মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছি, যাতে গণতন্ত্র এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ভালো নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। এক্ষেত্রে ভোটার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিকদের সম্মিলিত ভূমিকা অপরিহার্য।
সিইসি বলেন, ‘আমি শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনার নই, এই দেশের নাগরিকও। নাগরিক হিসেবে এই নির্বাচন সফল করাটাই আমার দায়িত্ব।’
নির্বাচন সামনে রেখে আনসার–ভিডিপি সদস্যদের প্রশিক্ষণকে ‘একটি বিনিয়োগ’ হিসেবে উল্লেখ করে নাসির উদ্দীন বলেন, যত বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে, তারা তত বেশি দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসীভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
ভুয়া তথ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে সিইসি বলেন, এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানো খুব সহজ। তাই যাচাই ছাড়া কোনো তথ্য প্রচার করা উচিত নয়। ভুয়া তথ্য যাচাই ও প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনে একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আনসার সদস্যদের গ্রামীণ পর্যায়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে পারেন। তিনি জানান, প্রবাসী ভোটার ও আইনত আটক নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নির্বাচন ডিউটিতে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোট দিতে পারবেন। ১৬ নভেম্বর ‘পোস্টাল ভোটিং অ্যাপ’ চালু করা হবে, যার মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মতলেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, এবারের নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা হবে পুরোপুরি ডিজিটাল। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র থেকে আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনা ও ছবি আপলোড করবেন। যা সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনী, পুলিশ বা আনসার তাৎক্ষণিকভাবে দেখতে পাবে ও ব্যবস্থা নিতে পারবে।
তিনি বলেন, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ আনসার সদস্যরা নির্বাচনী নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো মোতায়েন প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে ‘এভিআইএমএস’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে, যেখানে শতভাগ ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। আগের মতো গ্রুপভিত্তিক মোতায়েনের প্রচলন চিরতরে বন্ধ করা হয়েছে, যা নির্বাচনী স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।