জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন চলাকালে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলমান মামলার চতুর্থ দিনের যুক্তিতর্কে তিনি এই দাবি করেন। ট্রাইব্যুনালে মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে এদিন দুটি অভিযোগের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। বৃহস্পতিবারও প্রসিকিউশন পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, “শেখ হাসিনা তিনজন ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে স্বীকার করেছেন যে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র (লেথাল উইপন) ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত করার পর হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। এমনকি হাসানুল হক ইনুকে তিনি আশ্বস্ত করেন যে নারায়ণগঞ্জে হেলিকপ্টার থেকে ছত্রীসেনা নামানো হবে, উপর থেকে বোমা হামলা চালানো হবে এবং প্যারাট্রুপার নামানো হবে।”
এর আগে মঙ্গলবার আদালতে শেখ হাসিনা, হাসানুল হক ইনু, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম মাকসুদ কামালের মধ্যে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড শোনানো হয়। প্রসিকিউশন পক্ষ দাবি করে, ওই অডিওর মাধ্যমে আন্দোলনের সময়ের নির্দেশ ও পরিকল্পনার অনেক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, এই অডিওসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, সাক্ষ্য ও ডিজিটাল প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ সরাসরি দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জুলাই ও অগাস্ট মাসে সারা দেশে তীব্র রাজনৈতিক আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রীয় হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটিতে এখন যুক্তিতর্ক পর্ব চলছে।