মা ইলিশ রক্ষায় এবার ভিন্নমাত্রার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে 'ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার' কর্মসূচির আওতায় নদীর পাশাপাশি আকাশপথেও চালানো হচ্ছে বিশেষ নজরদারি। এ কাজে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
প্রধান নদ—নদী—মেঘনা, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ওপরে সন্ধ্যার পর থেকেই চক্কর দিচ্ছে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টারে ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও শক্তিশালী সার্চলাইট, যা দিয়ে রাতের আঁধারেও চিহ্নিত করা যাচ্ছে অবৈধভাবে মাছ ধরার ট্রলার ও জেলেদের গতিবিধি।
হেলিকপ্টার থেকে পাওয়া তথ্য রেডিওর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোস্টগার্ড পৌঁছে যাচ্ছে সেই স্থানে। ফলে নদীতে চলমান এই অভিযান আরও কার্যকর ও দ্রুততর হয়েছে।
বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার বায়জীদ মতিন বলেন, "আমরা কিছু আইসোলেটেড জায়গায় বোট শনাক্ত করেছি। সেসব এলাকার অবস্থান আমাদের এয়ার হেডকোয়ার্টারকে জানানো হয়েছে। অভিযান চলবে, আমরা আশাবাদী সফল হবো।"
মৎস্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০—২১ অর্থবছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করার পর ইলিশ উৎপাদন প্রায় ৫২ শতাংশ বেড়েছিল। এবারের অভিযানে আরও ভালো ফলের আশা করছে অধিদফতর।
মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আব্দুর রউফ বলেন, "বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার সহযোগিতায় পরিচালিত অভিযান প্রজননে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এবং মা ইলিশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।"
এখন আকাশে বিমান বাহিনী, নদীতে কোস্টগার্ড—দুই বাহিনীর সমন্বয়ে চলছে ইলিশ রক্ষার কঠোর অভিযান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জেলেদের জীবিকা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা গেলে এই সুরক্ষা টেকসই হবে না।
আ.দৈ/ওফা