অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে ১০৪ জনের বহর নিয়ে গেছেন জানিয়ে এর সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম।
বাংলাদেশের মতো একটা দুর্বল অর্থনীতির দেশে ১০৪ জন প্রতিনিধি নিয়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে যাওয়া অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করে সরকারপ্রধান পিকনিকে গিয়েছেন কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই’ শীর্ষ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল-মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম।
মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসন আমাদের সেই নয় মাসের যুদ্ধকে মনে করিয়ে দিয়েছে। তাদের প্রতি ধন্যবাদ যারা রাজনীতি না করলে সেই আন্দোলনে নেমে দুঃসাহসিক তরুণরা হাসিনাকে হঠিয়েছে, আল্লাহর রহমতে হাসিনার শাসনের অবসান ঘটেছে।’
পিআর পদ্ধতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হলে তা দেশে অন্যায় করা হবে, জনগণের রায়ে পিআর পদ্ধতি হলে জনগণ তা মেনে নেব।’
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূস ১৩ মাস পর বুঝতে পেরেছেন রাজনৈতিক দল ছাড়া এই দেশের সংস্কার সম্ভব নয়।’জামায়াত-শিবিরকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা আওয়ামী লীগে-ছাত্রলীগে যোগ দিয়ে এই ১৬ বছর ছিল।’
তিনি মুক্তিযুদ্ধে জামালপুরের বকশিগঞ্জের কামালপুর আক্রমণের ঘটনা বর্ণনা করেন। সেখানে ২০০ জন যোদ্ধা গিয়ে অর্ধেক শহীদ হয়ে ১০০ জন ফিরে আসেন বলে জানান।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক হেরে গিয়েছিল, কিন্তু মুজিব হেলিকপ্টারে করে ব্যালেট ঢাকায় এনে মোশতাককে জিতিয়েছিলেন। মুজিব সুযোগ বুঝে ভারত চলে গিয়েছিলেন, তার শহীদ হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি সে সময় কেউ বলে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কেউ বলে পাকিস্তানের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর তার দল দাবি করে তিনি নাকি যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।’
দুদু বলেন, ‘জিয়া পরিবার আর শেখ পরিবার আকাশ-পাতাল তফাৎ। জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধের মূল ভূমিকা পালন করেছেন।’
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা এখনো ক্ষমা চায়নি, তারা ক্ষমা চাক। তারপর বোঝা যাবে।’অনুষ্ঠানের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজুল হক বলেন, ‘আমাদের দেশটা কচুরিপানার মতো ভেসে আসেনি, যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের এই দেশ স্বাধীন করতে হয়েছে। এই দেশকে নিয়ে কোনো খেলা করা যাবে না, নির্বাচন দিতে হবে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে গণতান্ত্রিক দল দেশ চালাবে।’