চীন আবারও ভাঙল নিজস্ব রেকর্ড। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুইঝো প্রদেশে উদ্বোধন করা হলো বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার তিন বছরের বেশি সময় পর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সেতুটি।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, নতুন এই সেতু ৬২৫ মিটার (২ হাজার ৫১ ফুট) উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে। এর মাধ্যমে ৫৬৫ মিটার উচ্চতার পূর্বের সর্বোচ্চ সেতু বেইপানজিয়াং সেতুর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, আগের সেতুটিও একই প্রদেশে অবস্থিত।
উদ্বোধনী দিনে সরাসরি সম্প্রচারিত ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, নীল রঙের বিশাল সহায়ক টাওয়ার আংশিকভাবে মেঘে ঢাকা পড়েছে। সেই দৃশ্যের মধ্যেই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী, স্থানীয় কর্মকর্তা ও বহু মানুষ উপস্থিত হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
গুইঝো প্রদেশের পরিবহন বিভাগের প্রধান ঝাং ইয়িন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হুয়াজিয়াং সেতু চালু হওয়ায় দুই পাশের মানুষের যাতায়াত সময় দুই ঘণ্টা থেকে কমে মাত্র দুই মিনিটে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, “এই সেতু শুধু যাতায়াত সহজ করেনি, বরং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন গতি সঞ্চার করেছে।”
চীন গত কয়েক দশকে অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। বিশেষ করে দুর্গম গুইঝো প্রদেশেই হাজার হাজার সেতু রয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০০ সেতুর প্রায় অর্ধেক এই প্রদেশেই। সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু ১ হাজার ৪২০ মিটার দীর্ঘ। এর প্রধান স্প্যান এটিকে পাহাড়ি এলাকায় নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্প্যানের সেতুতে পরিণত করেছে।
তবে কাঠামোর উচ্চতা অনুযায়ী বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর রেকর্ড এখনও ধরে রেখেছে ফ্রান্সের মিলাও ভায়াডাক্ট। এর উচ্চতা ৩৪৩ মিটার হলেও, উপত্যকার গভীরতা হিসাব করলে হুয়াজিয়াং সেতুই বিশ্বের সর্বোচ্চ।
এই সেতু শুধু একটি প্রকৌশল বিস্ময় নয়, বরং চীনের দ্রুত নগরায়ণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।