জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী স্টাইলের কোনো নির্বাচন জনগণ আর হতে দেবে না। তিনি বলেন, একটি শ্রেণি আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার শেষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। জনগণ আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে।
আজ / গতকাল শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশ শেষে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে গণমিছিল নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে আবারও সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।সমাবেশ ও গণমিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, এস এম লুৎফর রহমান, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ, মাহমুদুল আলম, ডা. মুহাম্মদ আবু নাছের, মুহাম্মদ শফিউল আলম প্রমুখ।
জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫-দফা বাস্তবায়নের দাবিতে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর গেটে মহানগর জামায়াত আয়োজিত বিক্ষোভ ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
জামায়াতের ৫ দফা দাবিগুলো হলো,জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। আর এসব দাবি সরকার মেনে নিলে আগামীকালই নির্বাচন হলে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
প্রধান অতিথি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যে দাবি বাস্তবায়নে জন্য রাজপথে নেমেছি, এসব দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূস জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসরদের দৃশ্যমান বিচার করবে এবং পাচারকৃত টাকা ফেরত আনবেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কোনো দলীয় সরকার নয়। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, ড. ইউনূসের আশপাশে অনেকে একটি দলের পকেটে ঢুকে গেছে। সরকারের ভেতরে থেকে অনেকে সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
এটি মেনে নেবে না জনগণ। ফ্যাসিবাদের মতোই জনগণ তাদেরকে প্রতিরোধ করবে। সংস্কারের প্রত্যাশা ছিল তা হয়নি। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতেই হবে। প্রতিবন্ধকতা তৈরিকারিদের চিহ্নিত করা হবে। নির্বাচনের জন্য এখনও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। দেশে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হয়নি।
তিনি বলেন, অনেকে বলছে আমরা রাজপথে কেন নেমেছি? আমরা বলছি, রাজপথের আন্দোলন ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়েছে দেশের জনগণ। কাজেই রাজপথে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জুলাই বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা সেটা আমরা বাস্তাবায়ন করবো।
পিআর নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে গণভোটের দাবি জানিয়ে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি, গণভোট দিন। জনগণ পিআর-এর পক্ষে আছে কি বিপক্ষে আছে। জনগণ যদি পিআর মানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও মানতে হবে। আর জনগণ যদি বিপক্ষে যায় আমরা তা মেনে নেব। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনীতি অকার্যকর করে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অপরাধীদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
আ. দৈ./কাশেম