বহুবছর পর আমরা একটা ঐতিহাসিক নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। ডাকসু নির্বাচন সমগ্র জাতির জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবে। উপাচার্য বলেন, সারা দেশ এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। নির্বাচনে বিভিন্ন স্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত থাকবেন। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো আশঙ্কা নেই।
ভলানটিয়ার শিক্ষক ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে বলে জানান অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। ঢাকা বিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, যদিও এই নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক, তারপরও এটির জাতীয় গুরুত্ব আছে। এই বিবেচনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এদিকে সোমবার এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য ঢাবি উপাচার্য বলেন, ডাকসু তোমাদের অনুষ্ঠান, তোমরা গভীরভাবে চেয়েছো, তাই আমরা আয়োজন করেছি। নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষ পথে। ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, আগামীকাল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ডাকসু নির্বাচন। ভারীভাবে বললে ঐতিহাসিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যা ইতিহাসে আগে ঘটেনি। ঢাবি উপাচার্য বলেন, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৪০ হাজার ভোটার। মোট ৮টি কেন্দ্রে ও ৮১০টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে ভোট দিতে আসবেন, আমরা অপেক্ষায় থাকবো। ড. নিয়াজ বলেন, নারী ভোটারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবে আয়োজন করার জন্য ভোট কেন্দ্রগুলো হল থেকে স্থানান্তর করে সমন্বিত করেছি। তিনি জানান, প্রতিটি কেন্দ্রের ভোট গণনা কেন্দ্রের বাহিরে থাকা মনিটরে সরাসরি দেখানো হবে।
নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, 'ডাকসু নির্বাচন তোমরা চেয়েছ; গভীরভাবে প্রত্যাশা করেছ; গণ-অভ্যুত্থানের মৌলিক মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণও। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য সমন্বিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক একটি ভয়েস তৈরি করা।
এসব গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধকে আমরা তুলে ধরবার জন্য তোমাদের আগ্রহে এবং ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করেছি। তোমাদের তোমাদের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠান নির্ভয়ে নির্ভয়ে তোমরা তোমরা ভোট দিতে আসবা,
ঢাবি উপাচার্য বলেন, সারা দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা শুভকামনা জানাচ্ছেন। এখন একটি ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণের প্রক্রিয়াকে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করছে, তাতে তোমরা তোমাদের ভূমিকা পালন করবে, সেটাই প্রত্যাশা করছি। অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'ভোটকেন্দ্রে আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া আছে। তারা নির্ভয়ে এসে ভোট দিতে পারবে। সারা দেশ তোমাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে।
সেই বিশ্বাসের প্রতিদান তোমরা দেবে।' ভিডিও বার্তার শুরুতেই ডাকসু চালু করতে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, 'প্রায় ১১ মাসের ব্যাপক প্রস্তুতির পর সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তুতির শেষভাগে চলে এসেছি। আগামীকাল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন। ভোটগ্রহণ আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে এবং দিনব্যাপী চলবে; ৪টার দিকে ভোট নেওয়া শেষ হবে।'
ডাকসুর নির্বাচন কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ উল্লেখ করেন তিনি বলেন, 'যারা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তারা বিভিন্নজন বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ। তবে সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখছেন। আমরা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে ভোট গণনা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেব। ব্যাপকসংখ্যক সাংবাদিক থাকবেন। তারা মনিটর করবেন।'
জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, 'সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এ পর্যায়ে এসেছি পরস্পর পরস্পরের হাত ধরে। এখন বাকি পথটুকু আমরা খুব স্বচ্ছন্দে পার হতে পারব বলে বিশ্বাস করি। যেহেতু নির্বাচন প্রক্রিয়া। কিছু প্রার্থী জিতবেন, কিছু প্রার্থী জিতবেন না।
জয়-পরাজয় থাকবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজয়ী এবং বিজিত। উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। গণতান্ত্রিক একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণ বা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আপনি আপনার ভূমিকা পালন করলেন। বহু বছর আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। সেই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী এবং বিজিতকে ভূমিকা রাখছেন এবং রাখতে হবে। এটিই বিরাট সার্থকতা।'