ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে আসামিদের হাজির পর তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার অপর ১৫ আসামিরা হলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো.জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো.আল আমিন, মো.নাজমুল আহসান,সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো.শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার,দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো.আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
আজ শুক্রবার সকালে এই ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ‘মঞ্চ ৭১’ এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য প্রদান করছিল। তার এই ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের জন্য উপস্থিত লোকজন তাদেরকে ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দেয়।
পরস্পর সহায়তাকারী হিসেবে দেশকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনার অপরাধ করেছে। মামলাটি তদন্তাধীন। এমতাবস্থায় মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়ায় পর্যন্ত তাদের জেলে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এছাড়া মামলার তদন্তের স্বার্থে পরবর্তীতে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের পুলিশ রিমান্ডে পাওয়ার আবেদন করা হবে। পরে আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখিসহ অন্যরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা গেছে, পলাতক শেখ হাসিনার নিদের্শনার মোতাবেক, কল্পনিক অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের কথিত অভিযোগ সামনে রেখে গোপনে গত ৫ই আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। কৌশলে মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান সামনে রেখে জনগনকে বিভ্রান্তিতে ফেলে সারা দেশে হট্টগোল করা। তারই অংশ হিসেবে গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারীরা পরিকল্পিতভাবে এই নাটক করেছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার সরিয়ে নেয়। একই সাথে আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হয়। তবে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ সদস্যরা অনুষ্ঠানের ভেতর থেকে ১৬ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশের উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আদালতে হাজির করলে, আদালত কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
আ. দৈ./ কাশেম