কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই প্রকল্পে প্রায় ৬৮৬ কোটি টাকা রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থার উপপরিচালক মো. সিরাজুল হক। মামলায় ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আসামি করা হয়েছে সেতু বিভাগের সাবেক সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমদ এবং সাবেক যুগ্ম সচিব আলীম উদ্দিন আহমেদকে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, “এই প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে একাধিক অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। প্রকল্পের নেগোসিয়েশন কমিটি যেখানে ৬৪৬ মিলিয়ন ডলারে কাজ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছিল, সেখানে সেটি উপেক্ষা করে বাড়তি খাতে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে যা ছিল অপ্রয়োজনীয় এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সুপারিশবহির্ভূত।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছে তিনটি খাতে- পরিষেবা এলাকা (সার্ভিস এরিয়া), পর্যবেক্ষণ সফটওয়্যার এবং একটি ‘ট্যাগ বোট’। এসব কাজ প্রকল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, তবুও তা অন্তর্ভুক্ত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। শুধুমাত্র এই তিনটি খাতেই সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে প্রায় ৫৮৫ কোটি টাকারও বেশি।
এছাড়া নিয়ম লঙ্ঘন করে সরকারি ক্রয় আইন (পিপিএ-২০০৬) অবমাননা করে আরও ৫৫ লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে এক পরামর্শক নিয়োগ করা হয়, যার কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না। সব মিলিয়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৮৬ কোটি টাকা।
এই ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৪০৯ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, তদন্তে যদি আরও প্রমাণ মেলে, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে আসামির তালিকাও সম্প্রসারিত হতে পারে।