সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। আজ ১৫ আগস্ট তার ৮১ বছরের যাত্রা শুরু। জাতীয়তাবাদী শক্তির অবিসংবাদিত আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন এবার এমন একসময় উপস্থিত হয়েছে যখন পতিত শেখ হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে বিনা বিচারে দীর্ঘকাল অসুস্থ অবস্থায় বন্দি জীবন যাপন শেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মুক্ত জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি। মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ।
মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি :
আজ ১৫ আগস্ট শুক্রবার বেগম খালেদা জিয়া ৮১ বছরে পা দিচ্ছেন। বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও জন্মদিনে নেতাকর্মীদের কেক কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ শুক্রবার বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় এবং একই সঙ্গে ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী শহিদগণ, ‘৯০-এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ও ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনায় বিএনপির উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয় অথবা মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষ্যে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ব্যতিরেকে কেক কাটা কিংবা অন্য কোনো আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান না করার জন্য সব নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারত বর্ষের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তির ছোট্ট শহরে বেগম জিয়ার জন্ম। পৃথিবীতে তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা থেমেছে মাত্র। তখন শরতের স্নিগ্ধ ভোর। নতুন ফুটফুটে শিশু কন্যার আগমনে পরিবারের সবাই আনন্দিত। নাম রাখা হয় ‘শান্তি’। পরে মেঝ বোন সেলিনা ইসলাম পুতুলের মতো শিশুর নাম রাখেন ‘পুতুল’। পরবর্তী পর্যায়ে তার পরিবার দিনাজপুরে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
৯০-এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় তিনি আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনে জনগণ বেছে নেন তাকে। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীর গৌরবে অভিষিক্ত হন বেগম জিয়া। তিন বার সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে বেগম খালেদা জিয়াই একমাত্র নেত্রী, যিনি অন্তত ১১ বার বন্দিদশা মোকাবিলা করে স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষুকে ভ্রুকুটি করে ষড়যন্ত্র ও কুটিলতার জাল ছিন্ন করে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উজ্জ্বল পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিলেন এবং সফলকাম হয়েছিলেন।
খালেদা জিয়ার ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত আসে ওয়ান ইলেভেনের সময়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির সেনানিয়ন্ত্রিত সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ জিয়া পরিবারের ওপর নেমে আসে নির্মম উত্পীড়ন-নির্যাতনের ভয়াবহতা। খালেদা জিয়াকে বন্দি করে সাব-জেলে নিক্ষেপ করা হয়। দেশ ত্যাগে বাধ্য করতে তার ওপর নানামুখী চাপ সৃষ্টি করা হয়। তারেক রহমানকে বন্দি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এই জনপ্রিয়তম নেতাকে হত্যার জন্য পঙ্গু করে দেওয়া হয়। তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে বন্দি করা হয়। চলে নিপীড়ন। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় খালেদা জিয়া-তারেক রহমান ও বিএনপি বিনাশের নীলনকশা।
আ. দৈ./কাশেম