গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে ঘিরে বুধবার (১৬ জুলাই) দিনভর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিকেলে মাদারীপুরের পথে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহরের ওপর ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে তা এক ভয়াবহ রূপ নেয়।
এর প্রভাব গিয়ে পড়ে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারেও, যেখানে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে মূল ফটক ভাঙার চেষ্টা করা হয়, মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয় এবং ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা কারাগারে ঢুকে কারা রক্ষীদের ওপর আক্রমণ চালায়, এতে বেশ কয়েকজন রক্ষী আহত হন। এমন নজিরবিহীন ঘটনায় প্রশাসনের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি হয় এবং নিরাপত্তা বাহিনী চরম সতর্কতায় চলে যায়।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা শহরের বিভিন্ন স্থানে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এনসিপির গাড়িবহরের ওপর ইটপাটকেল ছুঁড়ে ভাঙচুর চালানো হয় বেশ কয়েকটি যানবাহনে। একপর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনী এনসিপির নেতাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
এই সহিংসতার পর জেলা শহরে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়, যার আওতায় সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম, সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন ঘটনা শুধু গোপালগঞ্জ নয়—সারাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।