পোশাকখাতে সুষ্ঠূ আইন-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীল শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ধারাবাহিকভাবে শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আসছে।
আজ ১০ জুলাই উত্তরাস্থ বিজিএমইএ দপ্তরে শ্রমিক ফেডারেশন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের আরও একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মোঃ রেজোয়ান সেলিম, পরিচালক আসেফ কামাল পাশা এবং পরিচালক শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ।
মতবিনিময় সভায় পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম মসৃণভাবে পরিচালনা করার স্বার্থে সুষ্ঠূ আইন-শৃঙ্খলা ও পোশাকখাতে স্থিতিশীল শ্রম পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, কারখানাগুলোতে যাতে করে আইন-বহির্ভূত দাবী ও তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শ্রমিকরা রাস্তা যেন আশেপাশের কারখানাগুলো ভাংচুর না করে অথবা দাবী আদায়ের নামে রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষদের জন্য ভোগান্তি বয়ে না আনে, সে ব্যাপারে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর নেতৃবৃন্দকে সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উপস্থিত শ্রমিক নেতারা বলেন, শিল্পে শ্রম অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি কারুরই কাম্য নয়। নেতারা কারখানার সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে কারখানার অভ্যন্তরেই সমাধান করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রমিক ভাইবোনদের আইনসঙ্গত দাবীগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানের জন্য বিজিএমইএ এর বর্তমান বোর্ডের উদ্যোগ - গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর ও নারায়নগঞ্জে বিজিএমইএ এর আঞ্চলিক অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল স্থাপনের উদ্যোগকেও স্বাগত জানান।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য উপরোক্ত গার্মেন্টস অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিজিএমইএ এর বর্তমান বোর্ডের উদ্যোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই জমি বরাদ্দ চেয়ে বিজিএমইএ থেকে সরকারের সংশিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং জমি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজিএমইএ তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতাল নির্মানের কাজ শুরু করবে।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, পোশাক শিল্পের কর্মরত শ্রমিক ভাইবোনদের জীবন স্বাচ্ছন্দ্যময় করার জন্য তাদের জন্য ফুড রেশনিং ব্যবস্থা নিয়েও তার বোর্ড খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। এ ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতি শ্রমিক ফেডারেশনগুলোকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানালে ফেডাশেনগুলোর নেতারা এতে ইতিবাচক সাড়া দেন।
মতবিনিময় সভায় শ্রমিকদের ডাটাবেস তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ফুড রেশনিং কার্ড বাস্তবায়নের মতো শ্রমিকদের কল্যান ইস্যুগুলোতে কাজ করার জন্য ডাটাবেস তৈরি করা অপরিহার্য। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় উভয় পক্ষ পোশাকশিল্পে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে অঙ্গীকার করেছেন।
আলোচনায় অংশগ্রহন করেন মন্টু ঘোষ, সভাপতি, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র; তাসলিমা আক্তার, সভাপ্রধান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন; মোঃ ফরিদুল ইসলাম, সভাপতি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিটি; মোঃ মিজানুর রহমান অপু, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক দল, কেন্দ্রীয় কমিটি; অরবিন্দু বেপারী বিন্দু, কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন (বিজিএসএফ); ডাঃ সামছুল আলম, সভাপতি, গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন; মোঃ ইব্রাহিম, সভাপতি, স্বদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; মোঃ শহিদুল ইসলাম সিকদার (বাবুল), সভাপতি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট; মোঃ মিজান হাওলাদার, সততা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, সভাপতি, কেন্দ্রিয় কমিটি; মোঃ রুহুল আমিন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন (বিজিএসএসএফ); মোঃ নজরুল ইসলাম, সভাপতি, সততা গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন; ফয়সাল ইবনে কবির, সাধারন সম্পাদক, মেহনতি গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল ওয়াকার্স ফেডারেশন; সাদেকুর রহমান শামীম, সাধারন সম্পাদক,, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র; শিরিন আক্তার, সভাপতি, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন; রাবেয়া সুলতানা রানী, সভাপতি, বাংলাদেশ সংগ্রামী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এবং মোঃ হারুন অর রশিদ, সভাপতি, গার্মেন্টস শ্রমিক অন্দোলন বাংলাদেশ প্রমুখ।