ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণার দাবিতে টানা আন্দোলনে নগর ভবনে সেবাসহ সব কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। আদালত এবং সরকারে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনার পরও কোনো সুরাহা না হওয়া অবশেষে আন্দোলনকারীরা সেবা কার্যক্রম চালু করতে তালা খুলে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (২২ জুন) দুপুরে নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের সমন্বয়ক মশিউর রহমান। তবে খোলা হবে না প্রশাসক এবং প্রকৌশলীদের কক্ষের তালা। এ সময় তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসসহ নাগরিক সেবা চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মরতদের নিজ নিজ কাজে ফিরে যেতে আহ্বান জানান।
মশিউর রহমান বলেন, আমরা আন্দোলনরত ঢাকাবাসীকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার আহ্বান জানিয়ে জরুরি নাগরিক সেবাসমূহ নির্বিঘ্ন করার সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তার দপ্তর, হিসাব ও অডিট বিভাগ, সমাজকল্যাণ বিভাগ, আইন বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ, সম্পত্তি বিভাগ, পরিবহণ বিভাগ, বিদ্যুৎ সার্কেল, যান্ত্রিক সার্কেল, সংস্থাপন শাখা, নিরাপত্তা শাখা, জনসংযোগ বিভাগ, আইসিটি সেল, নগর পরিকল্পনা বিভাগ, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নিজ নিজ অফিসে কর্মরত থেকে তাদের ওপরে দায়িত্বসমূহ। যেমন- জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ ওয়ারিশান সনদ, বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্র, সব ধরনের পৌর ও বাজার কর আদায়, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন কার্যক্রম, ডেঙ্গু চিকনগুনিয়া ও করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম, সড়ক বাতি প্রজ্বালন সচল রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণই এ দেশের প্রকৃত মালিক। তারা সঠিক সময়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এমন ফ্যাসিস্ট, বেআইনি কার্যকলাপের জবাব দিবে।
সাবেক সচিব মশিউর রহমান আরও বলেন, কোন দালাল শ্রেণি স্বৈরাচারের দোসর, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তথা নগর ভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহের কোথাও প্রবেশ করতে পারবে না। তাদের সব স্থানে দেখামাত্রই প্রতিহত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব, অর্থাৎ নাগরিক সেবা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ বা গাফিলতি করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মশিউর রহমান বলেন, তিনিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন; তা কোনো ক্রমেই বাস্তাবায়ন হতে দেওয়া হবে না। তাই সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের কোনো বিল ছাড় দিতে দেবে না। এছাড়াও ফ্যাসিস্ট আমলের দোসরদেরও নগর ভবন এবং আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নতুন করে কোনো নিয়োগ দিতে গেলেও তা প্রতিহত করা হবে।
ইশরাককে মেয়র ঘোষণার দাবিতে গত ১৪ মে থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ রেখেছে কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।