এই সিন্ডিকেট টানা ১৬ বছর যাবৎ অত্যন্ত ধাপটের সাথে নিরীহ কর্মজীবী নারীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে অবৈধভাবে ঘুষসহ নানা সুবিধাদি হাতিয়ে নিচ্ছেন। হোস্টেলের সহকারী সুপার এতোটাই ডেসপারেট যে, তার ইচ্ছার বাইরে কারো কোন আবেদন নিবেদন চলে না। তিনি হোষ্টেলে সিট বন্টনে রমরমা ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। হোষ্টেলে বহিরাগতদের মাঝে সিট বরাদ্দ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
শাহানা সুলতানা প্রজাতন্ত্রে একজন সরকারি কর্মচারী সেটা পর্যন্ত ভুলেগেছেন। সরকারি কর্মচারী হিসেবে ওই হোষ্টেলে বরাদ্দ প্রাপ্ত অপর নারী কর্মচারীদেও সুযোগ সুবিধা দেখা এবং কর্মজীবী নারীদের সেবা দেওয়াটাই হলো তার মুল দায়িত্ব। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালনের পরির্বতে পুরো অফিসটাকে নিজের পৈত্তিক সম্পত্তি মনে করেন। সহকারী সুপার শাহানা সুলতানা যাকে ইচ্ছা হোষ্টেল সিট বরাদ্দ দেন, আবার যাকে ইচ্ছা বরাদ্দ করা সিট বাতিল করেন।
সরকারি চাকরির নিয়মে ৩ বছর পর পর বদলির আইনও বিধান থাকলেও শাহানা সুলনাতার টানা ১৬ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে নানা কৌশলে ম্যানেজ করে অত্যন্ত দাপটের সাথে একই দপ্তরে বহালতবিয়তে রয়েছেন।
আরো অভিযোগ উঠেছে,ফ্যাসিস্ট আওামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘ ১৬ বছর একই দপ্তরের চাকরির সুবাধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে তিনি অনেক সম্পদ করেছন। ইতোমধ্যে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট, ঝিনাইদাহে তার নিজের এলাকায়ও অনেক সম্পদ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে ভিটটিম ডা. জান্নাত লিখিত অভিযোগ করেছেন, ওই হোস্টেলের বরাদ্দপ্রাপ্ত ও বাসিন্দা কর্মজীবী নারী। তিনি পেশায় একজন ডাক্তার, তার সাথে অমানবিক আচরণের সুনিদিষ্ট কিছু অভিযোগ করেছেন। তার অনুপস্থিতিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উক্ত হোষ্টেলের সহকারী সুপার শাহানা সুলতানার নিদেশে কর্মচারীরা নারী ডাক্তার জান্নাতের মালামাল তছনছ করেছে। তার মূল্যবান কিছু মালামাল কক্ষের বাইরে ছুড়ে ফেলেছে।
শুধু তাই নয়, মহিলা ডাক্তার জান্নাতের ব্যক্তিগত ব্যবহারিক জামা কাপড়, অন্যান্য মালামাল তছনস করেছে,জরুরি জিনিসপত্রস, মূল্যবান কাগজপত্র কক্ষের মেঝে ছড়িয়ে ছিটে ফেলে রাখেন। পরে খবর পেয়ে ডাক্তার জান্নাত ওই হোষ্টেলে ছুটে যান এবং দাঁয়িুত্ব প্রাপ্ত কর্মচারীদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু তারা বলেছেন, হোষ্টেলের সহকারী সুপারের নির্দেশে এসব করেছেন।এর বেশি কোন কথা বলতে তারা রাজি নয়।
ভিটটিম ডা. জান্নাত লিখিত অভিযোগে আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার কোন বিচার না পেয়ে অবশেষে গত ৩ মার্চ ডিএমপির নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানার ওসি ভিকটিম ডাক্তার জান্নাতকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তদন্ত করে অভিযোগ সত্য হলে,অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজ শনিবার বিকেলে ৩টা ৪৮ মিনিটে নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিন উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, ভিকটিম ডা. জান্নাতের অভিযোগ তদন্তের জন্য থানা থেকে সাব ইন্সপেক্টর (এস আই) সিদ্দিকী রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বও ভিকটিমকে দেওয়া হয়েছে। ভিকটিম ওই তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেই আপডেট জানতে পারবেন। তবে ভিকটিম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে তিনি কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। যারফলে তিনি এই বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
আজ শনিবার (৮ মার্চ) দুপুর আড়াই টায় সরকারি কর্মজীবী নারীদের ওই হোস্টেলের সহকারী সুপার শাহানা সুলতানার সাথে তার মুঠোফোনে প্রাপ্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। তিনি শুরুতেই নিজেকে নিদোর্ষ দাবী করে বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের জবাব তিনি দেবেন না। কারণ আজ শনিবার এবং এখন অফিস টাইম না। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি কোন কথা বলবেন না।
আ. দৈ. /কাশেম