শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকালে গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য সংস্কার করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধন করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার পর ট্রাইব্যুনালের সংস্কার করা ভবন ও এজলাস উদ্বোধন করা হয়। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান, অন্যান্য বিচারপতি, রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯০৫ সালে গভর্নর হাউজ হিসেবে যাত্রা করা পুরাতন হাইকোর্ট ভবনটি পাকিস্তান আমল থেকে ঢাকা হাইকোর্ট এবং ২০১০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
উদ্বোধনকালে প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকৃত মূল ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে নতুন যুগের সূচনা হলো।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই ভূ-খণ্ডের বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ‘ঢাকা হাইকোর্ট’ বা ‘পুরাতন হাইকোর্ট ভবন’ হিসেবে যে মহান ঐতিহ্য ধারণ করে আছে, ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের শ্বাশ্বত নীতিসমূহের অনুসরণের মাধ্যমে তা নতুন মাত্রায় পূর্ণতা পাবে।
ট্রাইব্যুনালের প্রতি প্রত্যাশা সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, একজন সাধারণ নাগরিক গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি যে প্রত্যাশা রাখেন, প্রধান বিচারপতিও ঠিক অনুরূপ প্রত্যাশা রাখেন।এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় শত বছরের পুরোনো ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল। পুরোনো এই ভবনের পাশেই টিনশেডের স্থাপনা তৈরি করে সেখানে স্থানান্তর করা হয় ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশন। এরপর থেকে নতুন টিনশেড স্থাপনাতেই চলে আসছিল ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারকাজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রাথমিকভাবে টিনশেড স্থাপনাতেই বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
এর আগে সংস্কারের কাজ শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন যে নান্দনিক রূপে দেখা যাবে তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুক পোস্ট দেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আ. দৈ./কাশেম