বিশ্বায়নের এই যুগে পুলিশবিহীন সমাজ ব্যবস্থা চিন্তা করা যায় না উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, আমি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে ডিএমপিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই এবং আমার যারা সহকর্মী তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারাও উদাহরণ সৃষ্টি করুন।
আজ বুধবার সকালে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়াম রাজারবাগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নভেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, থানায় কোনো অভিযোগ বা জিডি হলে পুলিশকে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে যেতে হবে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে হবে। প্রয়োজনে মামলা রুজু করতে হবে। যেকোনো ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে পুলিশ সম্পর্কে জনগণের মাঝে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় দুই কোটি মানুষ ঢাকা শহরে বসবাস করে। যানজটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত আমাদের এই শহর। জুলাই-আগস্টে পুলিশের ভূমিকার জন্য পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরূপ অবস্থায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশ হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মানুষের কাছে যাওয়া এবং তাদের কথা শোনা। একই সাথে নাগরিকদের বলা যে আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে চাই।
তিনি যোগ করেন, আপনাদের আচার-আচরণ, নৈতিকতা ও জীবন যাপন পদ্ধতি এমন হতে হবে যেন তা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়। আইনগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একজন পুলিশ অফিসার সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কী ধারণা পোষণ করে সেটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা উল্লেখ করে তিনি ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোনো অবস্থাতেই কোনো খুনের ঘটনা যেন অপমৃত্যু হিসেবে থানায় রেকর্ড না হয় সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এর জন্য থানার অফিসার ইনচার্জ দায়ী হবেন।
কমিশনার আরও বলেন, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও কিশোর-গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে শিক্ষক, ছাত্র-জনতা, শ্রমিকনেতা ও ব্যবসায়ীসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে সিটিজেন ফোরাম গঠন করা হবে।
সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন নভেম্বর ২০২৪ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন-ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন ও পর্যালোচনা করা হয়। এসময় ডিএমপি কমিশনার বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সোনারগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িতে হামলা, গ্রেপ্তার তিনসোনারগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িতে হামলা, গ্রেপ্তার তিন
মাসিক অপরাধ সভায় নভেম্বর মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম, পিপিএম-সেবা; যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ, ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আ. দৈ/ আফরোজা