শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫,
৫ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার

শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
অপরাধ
আজিমপুরে ডাকাতির পর অপহ্নরিত শিশুটি মোহাম্মদপুরে উদ্ধার, গ্রেফতার-১
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Saturday, 16 November, 2024, 4:41 PM  (ভিজিট : 69)

 সম্প্রতি বহুল আলোচিত রাজধানীর আজিমপুরে বাসায় ডাকাতির পর ৮ মাসের শিশু কন্যাকে অপহরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। আর এ ঘটনায় অপহরণের পরিকল্পনাকারী মোছা. ফাতেমা আক্তার শাপলা (২৭)কে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

র‌্যাব বলছে, অপহরণের দুই সপ্তাহ আগে ওই বাসাটি রেকি করে অপহরণকারীরা। এরপর সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া নেয় ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে। বাসা ভাড়া নেওয়ার একদিন পরেই অপহরণ করে শিশুটিকে। অপহরণের পর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর মুক্তিপণ দাবি করেনি অপহরণকারী চক্রটি।

আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

তিনি বলেন, গত ১৫ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ফারজানা নামের এক নারীর বাসায় ডাকাতির সময় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নেওয়ার পাশাপাশি তারা একটি বাচ্চাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য র‌্যাব-১০ এর কাছে সহায়তা চায়। পরে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর এই অপহরণের পরিকল্পনাকারী মোছা. ফাতেমা আক্তার শাপলাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় অপহৃত ৮ মাস বয়সী শিশু কন্যা আরিসা জান্নাত জাইফাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার নারী ডাকাতি ও অপহরণের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস আরও বলেন, আরিসা জান্নাত জাইফার মায়ের নাম ফারজানা আক্তার। তিনি সরকারি চাকরি করেন এবং শিশুটির বাবা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাজধানীর আজিমপুরের লালবাগ টাওয়ার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় গত ৩ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি জানায়, অপহরণের ১ সপ্তাহ আগে অপহৃত শিশুর মায়ের সঙ্গে অফিসে যাতায়াত করার সময় গ্রেফতার শাপলার পরিচয় হয়।

এ সময় শাপলা ভুক্তভোগী মায়ের কাছে তার নাম রাইসা এবং তার বাড়ি নওগাঁ জেলা বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়। আসামি ফাতেমা আক্তার শাপলা জানায়, সে অবিবাহিত এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী।পড়ালেখার পাশাপাশি সে সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করে বলে জানায়।

র‌্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার শাপলা শিশুটির মা ফারজানা আক্তারকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে একটি ভালো রুম দরকার এবং তাকে সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুটিকে দেখভালও করতে পারবে। পরে ফাতেমা আক্তারকে সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া দেওয়ার জন্য রাজি হয় শিশুটির মা।

পরে গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার গত ১৪ নভেম্বর বিকেলে বাসায় আসে এবং শিশুটির মাকে ২০০০ টাকা অগ্রিম ভাড়া হিসেবে দিয়ে বাসায় রাত যাপন করে। পরের দিন সকালে গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার শিশুটির মা ফারজানা আক্তারকে জানায়, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে তার বাসায় আসবে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার তার চাচাতো ভাই পরিচয়ে ৩ ব্যক্তিকে বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় আসার পর আলাপচারিতার এক পর্যায়ে গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার ও তার কথিত চাচাতো ভাইয়েরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে।

এ সময় গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার ও তার সহযোগীরা বাসার স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে শিশু জাইফাকে নিয়ে গ্রেফতার ব্যক্তি বাসায় চলে আসে এবং তার সহযোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে। পরে গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকা থেকে শিশু জাইফাকে উদ্ধার করে অপহরণের পরিকল্পনাকারী ফাতেমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস আরও বলেন, গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার ও তার সহযোগীরা মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ঘটনাটি বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে তারা ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করতে পারেনি।

গ্রেফতার মোছা. ফাতেমা আক্তার শাপলা একজন গৃহিণী। সে ২০১০ সালে তার পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসবাস শুরু করে। পরে রাজধানীর অপর একটি কলেজে মার্কেটিং বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও তা শেষ করেনি। ২০২৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং ৩-৪ মাস আগে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকায় তার স্বামীর নিজস্ব ফ্লাটে বসবাস শুরু করে।

আ. দৈ. /কাশেম
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

দুদকের মামলায় বিএফআইইউ'র মাসুদ বিশ্বাস কারাগারে,রিমান্ড শুনানি রোববার
সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করল বিএসএফ
ইসিকে সরঞ্জাম সহায়তা দেবে ইউএনডিপি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি রোববার
বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতারা গন সংযোগে ব্যস্ত
চায়না পোশাকে সয়লাব দেশ
দুদকের মামলায় বিএফআইইউয়ের মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার
দক্ষতা ও নিষ্টার পুরস্কার, দুদকের মহাপরিচালক-পরিচালক পদে পদোন্নতি
রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে: সালাউদ্দিন
অপরাধ- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : [email protected]
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝