ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী ও চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ঘুষ,দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুইটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরআগে অভিযুক্তদো বিরুদ্ধে কমিশনের সভায় মামলা দাযেরের অনুমোদন হয়েছে।
আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আক্তার হোসেন বলেন, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত সময়ে তাদের নামে অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি ও বিপুল পরিমাণ সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর কমিশন এসব মামলার অনুমোদন দিয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার ২৬১ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেন এবং তা ভোগদখলে রাখেন। তার নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঘুস, দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ২৫৫ কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৭৩১ টাকা জমা এবং ২৫৫ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ২০৪ টাকা উত্তোলনের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এসব লেনদেন অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের উৎস গোপন করেন।
এ ঘটনায় দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অপর মাসলাটি দায়ের করা হয়েছে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে স্বামীর ক্ষমতার প্রভাব ও সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৮ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৯ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে।
তার নামে থাকা ৩৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনকভাবে ১১১ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৪১১ টাকা জমা এবং ১১১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭১২ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়, যা মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দুদক মনে করে। এ ঘটনায় পারভীন চৌধুরী এবং তার স্বামী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা অনুমোদন করা হয়েছে।
দুদক জানায়, দীর্ঘসময় ধরে চলা অস্বাভাবিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ বৃদ্ধির প্রমাণের ভিত্তিতেই মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগির মামলাগুলো দায়ের করা হবে। গত এপ্রিলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দেয় আদালত।
আ. দৈ./কাশেম