কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: সংকট, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের (টিএসসিসি) ১১৬ কক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আয়োজনে এ আলোচনা সভা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আহ্বায়ক এস. এম. সুইট সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মাদ নাসরুল্লাহ।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষ আলোচক হিসেবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা দেশের বিদ্যমান বৈষম্যমূলক নীতি ও প্রথার সমালোচনা করে সমঅধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও ছাত্র সমাজের ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বক্তারা সংগঠনের বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনায় গুরুত্বারোপ করেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘চব্বিশের গণবিপ্লবে বৈষম্য বিরোধী নেতারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছিল। ফ্যাসিবাদের আইকনিক পার্সন পতনের পর সবাই পৃথক হয়ে গেছে। বৈষম্য বিরোধী প্লাটফর্মের বিগত দেড় বছরে কোনো কমিটি ছিলো না, নার্সিং ছিলো না কিন্তু তারপরও সবাই নিজ উদ্যোগে দেশের জন্য কাজ করে গেছে।
সকল রাজনৈতিক দল বৈষম্য বিরোধী প্লাটফর্মকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। কারণ এই প্লাটফর্ম ফ্যাসিবাদের শিকড় তুলে ফেলেছিল, সবার আস্থা অর্জন করেছিল। সংগঠনের অনেক নেতা বৈষম্য বিরোধী প্লাটফর্মকে পলিটিকাল পার্টি হিসেবে দাড় করাতে চেয়েছিল। সংকটের তলানীতে থেকেও আমরা এই বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত নিতে দেইনি। ফলাফল হিসেবে যারা রাজনীতি করতে চাই তারা সংগঠন থেকে বের হয়ে গেছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘৪৭ ’শে বাংলায় যে আজাদী শক্তির উত্থান হয়েছিল বিগত আওয়ামী সরকার সেটাকে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন ন্যারেটিব দাড় করিয়েছে। ৭১ কে তারা একক ভাবে নিজেদের দাবি করেছে। এসব ভুলের কারণে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছিল। ৫ আগস্ট আমরা একটা ফ্যাসিজমের আইকনিক পার্সন কে ক্ষমতাচ্যুত করতে পেরেছি কিন্তু পুরোপুরি ফ্যাসিজম মূলোৎপাটন করতে পারিনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম গতানুগতিক রাজনীতি করবে না। যে ৭২ এর সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমরা সেটাকে আমূল পরিবর্তন করতে চাই।
আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই স্মৃতি সংরক্ষণে ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ গঠনের অনুরোধ জানিয়েছিলাম কিন্তু তারা উদ্যোগ নেয়নি। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সেই মহৎ কাজ করে দেখিয়েছে। তারা জুলাই স্মৃতি সংরক্ষণে বই, ম্যাগাজিন এবং বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করেছে যেটা প্রশংসনীয়। ’
অনুষ্ঠান শেষে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঘোষিত আগামী ১৩ নভেম্বর ঢাকা লক ডাউনের বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিলটি ডায়না চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
আ. দৈ./কাশেম