রাজধানীর উত্তরার মার্গারেটা লাউঞ্জ। এটি একটি মদের বার। তবে রাজধানীর অন্যান্য সাধারন বারের মত নয়। এই বারের সরকারি বৈধতা থাকলেও সময় সীমা রয়েছে। রাত ১২ টায় সাধারণ বারগুলোর আলো নিভে গেলেও এই বারের আলোর ঝলকানি রাত বাড়লেই বাড়ে।
সেই সাথে চলে অপ্রাপ্ত বয়সী তরুনীদের অশ্লীল নৃত্য। কাস্টমার আকৃষ্ট করার অপচেষ্টা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান নিয়েও নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই বারের মালিক ১০ জন। যারা সবাই ফ্যাসিস্টের দোসর।
ওই আমলেই বারের অনুমোদন নেয়া। এদের মধ্যে একজন হলেন রেজওয়ানা। তিনি জুলাই আন্দোলনের গণহত্যা মামলার আসামী ও বিদেশে পলাতক। জনসন রোড রূপালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় ১২শ’ কোটি টাকার ঋণ খেলাপী তিনি। তার রয়েছে সাউদিয়া রাইস মিল, সাউদিয়া অয়েলসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান।
এ বারের মালিকদের দু’একজন দেশে থাকলেও তারা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে দেদারসে চালাচ্ছেন এই অবৈধ ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করে চলছে এই বার। শুধু মদ আর নৃত্যতেই থেমে নেই। তাদের ব্যবসা। পাশেই রয়েছে আবাসিক হোটেল। বারে আসা কাস্টমারদের মনোরঞ্জনের জন্য তরুনীদের ওই হোটেলে সাপ্লাই দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে চলছে তাদের এ ব্যবসা। তবে বার কর্তৃপক্ষের দাবি সরকারের নীতি মেনেই তারা বার পরিচালনা করছেন। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, রাত ১২ টা পর্যন্ত বার খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও রাতভর খোলা থাকে এই বার। মাঝেমধ্যে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালানোর চেষ্টা করলেও অদৃশ্য শক্তির কাছে তারা ধরাশায়ী। যে কারণে কোনো নিয়ম নীতির ধার ধারেনা এ বার কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অদিদপ্তর থেকে ওই বারের কর্মকান্ড বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সরকারের উচ্চ মহলকে ম্যানেজ করে তা আটকে দেয়া হয়। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা চলছে।
এই বারের আরেকজন মালিক নাইম মরতুজা। তিনি দাবি করেন, ডিনার টাইমেই শেষ হয় তাদের বিকিকিনি। কোন অনিয়ম নেই এখানে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরে রয়েছে তাদের বার। অশ্লীল নৃত্যেও প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করার কথা জানান।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক (উত্তরা) দেওয়ান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, এই বারের লেট নাইট পারমিশন আছে। সময় সীমা রাত ২ টা পর্যন্ত। ক্লিনিং করতে কিছুটা সময় লাগতে পাারে। তবে ওখানে কোন অনিয়ম হয়না বলে দাবি করেন তিনি। নাচগানের পারমিশনের জন্য আবেদন করেছে তারা। কিন্তু রাতভর নাচ গান চললেও তিনি তা জানেন না বলে দাবি করেন।