ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ২০১১ সালে ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুইভাগে বিভক্ত করা হয়। জাতীয় সংসদে পাস করা একই আইনে এবং মন্ত্রনালয়ের প্রকাশিত গেজেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সৃষ্টি করা হয়।
তবে শুরুতেই ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নানাভাবে অবহেলিত ও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হতে থাকেন। তাদের বিষয়গুলো দেখার যেন কেউ নেই।
সূত্রমতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক ফ্যাসিস্ট মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসের আমলে নিরীহ কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কথায় কথা চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মাষ্টার রোলের কর্মচারী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ৫৯ বছর হলেই খালি হাতে বিদায় করা হয়েছে। আর মেয়রের পছন্দের বাইরের স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাত্র ৩ মাসের বেতন দিয়ে বিদায় করা হয়েছে।
অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে শুরু থেকেই কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নানা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। বেতন, ভাতা, অনুদান পাচ্ছেন এবং মাষ্টার রোলের কর্মচারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এককালীন মোটা অংকের অর্থ পাচ্ছেন।
এদিকে নিরুপায় হয়ে আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন স্ক্যাভেঞ্জার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নগরভবনে ৫ দফা কর্মসূচি পালন করেছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে ৫ দফা দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানসহ কঠোর কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি ধীরেশ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে কর্মচারীদের দাবি আদায়ের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন - বাংলাদেশ সিটি ও পৌর কর্মচারী ফেডারেশনের মহাসচিব- এস এম মোশাররফ হোসেন মিলন, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক- মোস্তফা নূর উদ্দিন আহমেদ সোহেল, পরিবহন কর্মচারী নেতা মোঃ শাহ আলম, মোঃ আলী প্রমুখ।
৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ফ্যাসিস্ট মেয়র তাপস কর্তৃক অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অন্যান্যদের চাকরিতে দ্রুত পুনর্বহাল করা, কর্মরত দৈনিকভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অন্যান্য কর্মচারীদের স্কেলভুক্তকরণ (যা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চলমান)।
গণমাধ্যমকে আব্দুল লতিফ বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে মেয়র তাপস আমাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বাতিল করে। কিন্তু এগুলো উত্তর সিটি করপোরেশনে চালু রয়েছে। আমাদের এই সুযোগ সুবিধাগুলো দিতে হবে। অন্যথায় দাবি আদায়ে আমরা মাঠে থাকবো। আগামী বুধবার নগর ভবনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও আগামী রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশনে এই প্রথা চালু ছিল। মৃত্যু ও ৫৯ বছরে চাকরিচ্যুত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের স্থলে ওয়ারিশান বা পোষ্যদের তাৎক্ষণিক পুনঃস্থাপন বা নিয়োগ দেওয়া। যা আগে ছিল। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ৫৯ বছর প্রথা বাতিলসহ মৃত্যুজনিত কারণে চাকরিচ্যুতদের এককালীন অনুদান ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। দৈনিকভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অন্যান্য দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের ঈদ বা উৎসব বোনাস ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।
আ. দৈ./কাশেম