ইউনিয়ন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটি সদস্য মো: সাইফুল আলম পলাতক রয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জরুরী বোর্ড সভায় তিনি আসেননি। বর্তমানে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জরুরী বোর্ড সভা ছিল এবং অডিট কমিটির সভাও ছিল। কিন্তু কোনো সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার থাকার কথা ছিল। এছাড়া তিনি কোনো ছুটিও নেয়নি।
ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকের জরুরী বোর্ড সভায় না আসায় ও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় মো: সাইফুল আলমের পরিবারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে তারা জানিয়েছে যে, তিনি সকালে ব্যায়াম করতে গিয়েছেন। তারপর তিনি আর বাসায়ও আসেননি। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক ঘণ্টা পরে ব্যাংক থেকে আবার যোগাযোগ করা হলে ও তার সম্পর্কে থানায় জিডি করার কথা বললে, সাইফুল আলমের স্ত্রী তাদেরকে জানিয়েছে, তিনি কোনো এক আত্মীয়র বাসায় বেড়াতে গেছেন। তাই থানায় জিডি করার প্রয়োজন নেই।
তবে ব্যাংকের জরুরী বোর্ড সভা রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে ব্যাংকের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হঠাৎ বেড়াতে যাওয়াটা ব্যাংকের কর্মকর্তারা ইতিবাচক হিসেবে নেয়নি।
জানা গেছে, মো: সাইফুল আলম জনতা ব্যাংকে বিভিন্ন পদে চাকরি থাকাকালিন অবস্থায় বেশকিছু ঋণ ও এলসি পেমেন্টের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ হয়েছে। বর্তমানে দুদকে এলসির টাকা দুর্নীতির দায়ে একটি মামলা হয়েছে। এ কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক হতে পারে। তাই তিনি নিজ থেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনা জানা-জানি হওয়ার পরে, ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাহকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, এই ধরনের একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি কিভাবে একটি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হন। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আনার জন্য গ্রাহকগণ অনুরোধ জানিয়েছেন ।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের ১২টি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো, এনআরবি কমার্শিয়াল, এনআরবি, মেঘনা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
তখন ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ। তিনি এক সময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। এছাড়া ব্যাংকের পরিচালক হয়েছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এই ডিএমডি মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ ও পেশাদার হিসাববিদ শেখ জাহিদুল ইসলাম।
এব্যাপারে ইউনিয়ন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটি সদস্য মো: সাইফুল আলমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।