অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দিকে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক ত্রাণ ও মানবাধিকার কর্মীদের বহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-র আটক যাত্রীদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘হামাস-সুমুদ জাহাজের যাত্রীদের নিরাপদে ইসরায়েলে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাদের ইউরোপে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
যাত্রীরা সুস্থ ও নিরাপদ আছেন।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থুনবার্গ ও অন্যান্য কর্মীদের ছবিও প্রকাশ করেছে। কর্মীদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেওয়ার ফুটেজ প্রকাশ করে ইসরায়েল জানায়, ২২ বছর বয়সী থুনবার্গ ও তার সঙ্গীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন এবং তাদের একটি ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে আসা হচ্ছে।
প্রায় ৪৫টি জাহাজ নিয়ে গঠিত ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গত মাসে স্পেন থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মীরা ছিলেন। যাদের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে ত্রাণ পৌঁছানোই ছিল এই ফ্লোটিলার প্রধান লক্ষ্য, যেখানে জাতিসংঘের মতে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে।
এদিকে বুধবার থেকেই ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার নৌযানগুলো আটক করতে শুরু করে এবং কর্মীদের সতর্ক করে বলা হয় যে এসব নৌযান অবরোধের আওতাধীন জলসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইতোমধ্যে অন্তত ৩৯টি জাহাজ আটক করেছে ইসরায়েল। আটক হওয়া জাহাজগুলোর মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গের জাহাজও রয়েছে।
ফ্লোটিলার ট্র্যাকিং সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৫টি নৌযানের মধ্যে ৩০টিরও বেশি আটক হয়েছে বা আটক করার চেষ্টা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবু কেশেক জানিয়েছেন, যেসব জাহাজ এখনও আটক হয়নি, সেগুলোর কর্মীরা যাত্রা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, তারা দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ, ব্যাপক অনুপ্রাণিত এবং ভোরেই অবরোধ ভাঙার জন্য সবকিছু করছেন।
তবে আয়োজকরা এক বিবৃতিতে নৌযান আটকের ঘটনাকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রমের সময় ইসরায়েলি বাহিনী নৌযান আটক করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আটকের পর অন্যান্য কয়েকটি জাহাজের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।