জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অনুষ্ঠিত অধিবেশন চলাকালে ব্যাপক শোডাউন করেছে বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে আসা নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিউইয়র্কে সমবেত হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ রাজনৈতিক নেতাদের স্বাগত জানান।
একই সময়ে আওয়ামী লীগও সেখানে সমবেত হওয়ার চেষ্টা করলেও বিএনপির শক্তিশালী উপস্থিতির কারণে টিকতে পারেনি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে বিএনপির কর্মীদের হামলায় আওয়ামী লীগের এক নেতা আহত হন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে তার স্ত্রীর জিম্মায় দেয়। ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভাষণ দিলে প্রায় সব দেশের কূটনীতিক ওয়াকআউট করে চলে যান। এর আধা ঘণ্টা পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে অধিবেশনে যোগ দেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ ও কর্তৃপক্ষ উভয় দলকে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি দিলেও, ৪৭ অ্যাভিনিউতে বিএনপির বিপুল উপস্থিতি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে ফেলে। নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে দিতে বিএনপি নেতাদের অনুরোধ করলে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি। এতে আওয়ামী লীগ নেতা আর জে রাসেল মারাত্মকভাবে নাজেহাল হন।
বিএনপির নেতারা জানান, টানা তিন দিন ধরে আওয়ামী লীগের হামলা, হুমকি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পর শুক্রবারের সমাবেশকে তারা টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল। কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং লন্ডন থেকে আসা আনোয়ার হোসেন খোকনের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগের উপস্থিতিকে ব্যর্থ করে দেন।
বিএনপির এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ নিউইয়র্কে নজিরবিহীন সন্ত্রাস চালিয়েছে। আমাদের নেতাদের ওপর হামলা ও হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাদের নেত্রী বিদেশ থেকে ফোনে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছে আমাদের নাজেহাল করার জন্য। এসব প্রমাণ আমরা মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে জমা দিয়েছি।”
এদিকে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা নিজুম মজুমদার সংঘর্ষের খবর শুনে নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে হোটেলে ফিরে যান।জাতিসংঘের সামনে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আনোয়ার হোসেন খোকন, আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, গাজী মনির, গোলাম ফারুক শাহীন, জসিম ভূইয়া, অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, সাইদুর রহমান সাইদ, ভিপি জসিম, আহবাব চৌধুরী খোকান, ফয়েজ চৌধুরী, দেওয়ান কাওসার, সোহরাব হোসেন, বদিউল আলম, নাহিদুল ইসলাম নাহিদসহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতারা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ গত সাড়ে ১৫ বছরের ‘অবৈধ শাসনে’ দেশকে ধ্বংস করেছে, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে হাজারো নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। এখনো তারা একই কৌশলে ক্ষমতায় ফেরার ষড়যন্ত্র করছে।