সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫,
৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
মতামত
ভয়—আতঙ্কের রাজ্যে ভৌতিক কাহিনি
গোলাম মাওলা রনি
Publish: Monday, 22 September, 2025, 10:26 AM  (ভিজিট : 118)

ইচ্ছা ছিল শিরোনাম দেব— দেশে গিজগিজ করছে সিআইএ এজেন্ট! অথবা ঝাঁকে ঝাঁকে পুঁটিমাছের মতো ধরা পড়ছে বিদেশি গোয়েন্দা, পরে মনে হলো সরাসরি এমন শিরোনাম না দিয়ে গল্পোচ্ছলে আসল ঘটনা বললে পাঠকদের কাছে তা সুখপাঠ্য হবে।

মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে মার্কেটিংয়ের একটি সূত্র বলে নিই। আপনি যদি কোনো পণ্য অনায়াসে বিক্রি করতে চান তবে সবার আগে ক্রেতার মনে ভয় অথবা লোভ জাগ্রত করতে হবে। আমরা যদি করোনাকালীন ভয় ও আতঙ্কের কথা স্মরণ করি এবং তারপর পৃথিবীব্যাপী করোনার টিকা, হ্যান্ড ওয়াশ, মাস্ক ইত্যাদির বিক্রিবাট্টা হিসাব করি তাহলে দেখতে পাব যে সাত শ কোটি মানুষকে ভয় দেখিয়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করা হয়েছে।

একইভাবে আপনি যদি মানুষের লোভ—কাম—ক্রোধ—হতাশা, বেঁচে থাকার আকাঙ্খা, শক্তিশালী হওয়ার বাসনা ইত্যাদি বিষয়কে পুঁজি করেন তবে সৌন্দর্য বাড়ার ট্যাবলেট, ফরসা হওয়ার ক্রিম, বলবর্ধক টনিক থেকে শুরু করে জাদুটোনা, বাণ মারা, মদ, গাঁজা, জুয়া, খুনখারাবি, চুরি—ডাকাতি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে সে ব্যবসাবাণিজ্য লোকবল নিয়োগ প্রভৃতি যা কিছু হচ্ছে তার আর্থিক মূল্য গুনেও শেষ করা যাবে না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা, ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবসা, ঝাড়ফুঁক, তাবিজকবজে বৈদ্য ওঝা, গণক ঠাকুর ইত্যাদি—সংক্রান্ত যে বিশাল বাজার মাশরেক থেকে মাগরেব পর্যন্ত রয়েছে তার সবকিছুই ভয়—আতঙ্ক, লোভলালসা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে।

মার্কেটিংয়ের উল্লিখিত সূত্র রাজনীতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনীতিতে লোভলালসা এবং আতঙ্কসংক্রান্ত লাভক্ষতির পরিমাণ এত বেশি হয়ে পড়ে যা ব্যবসাবাণিজ্যের সঙ্গে তুলনাই করা সম্ভব নয়। আমরা জানি, যে কোনো বিষয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সবার আগে দরকার পড়ে সুন্দর একটি গল্প— যেমন এক দেশে ছিল এক রাজা যার হাতিশালে হাতি ঘোড়াশালে ঘোড়া আর টাঁকশালে টাকার কমতি ছিল না। কিন্তু রাজার মনে শান্তি ছিল না। গণক ঠাকুর বলেছিলেন রাজরানির নাক দিয়ে কোনো এক অমাবস্যার রজনিতে দুইটি কালনাগিনী বের হবে। এভাবে রাজার মনে ভয় সৃষ্টি করে যেভাবে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তা অন্যভাবে সম্ভব নয়।

রাজার ভয়—আতঙ্ক বাদ দিয়ে এবার লোভলালসা নিয়ে আরেকটি কাহিনি বলি— এক দেশে ছিলেন এক রাজা, যার অপরূপ সুন্দরী রাজকন্যার এক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য ছিল। রাজকন্যা নৃত্যগীতে ছিলেন দুনিয়া সেরা। তার কণ্ঠের মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে বনের পাখিরা সারাক্ষণ রাজপ্রাসাদে ঘুরঘুর করত। রাজা পণ করলেন তিনি দুনিয়ার সেরা বীরের কাছে কন্যা সম্প্রদান করবেন স্বয়ম্বর সভার মাধ্যমে। রাজকন্যার ছবিসহ রাজা দুনিয়ার বড় বড় রাজদরবারে নিমন্ত্রণ পাঠালেন  আর সেই নিমন্ত্রণ পেয়ে দলে দলে রাজকুমার হাতি ঘোড়া হিরে মণি মুক্তা জহরতসহ স্বয়ম্বর সভায় উপস্থিত হলেন। তারপর ...রাজনীতির উল্লিখিত দুটো গল্প এবং গল্পজাত ভয়—আতঙ্ক এবং লোভলালসা থেকেই মহাভারত—রামায়ণ, ইলিয়ড, ওডিসি, শাহনামার মতো মহাকাব্য রচিত হয়েছে এবং সেসব কাব্যের বাস্তব মঞ্চায়ন ঘটাতে গিয়ে চেঙ্গিস, হালাকু, তৈমুর লংরা দুনিয়া তছনছ করেছেন। আমরা প্রথম মহাযুদ্ধ— দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শত বছর ধরে অবিরত যুদ্ধবিগ্রহ দেখেছি। কখনো সম্পদ, কখনো নারী কিংবা কখনো ধর্ম বর্ণ বংশীয় মর্যাদা রক্ষার কথা বলে যেসব গল্প তৈরি করা হচ্ছে তার পরিণতিতে আমরা নাৎসিবাদ—ফ্যাসিবাদ—ইহুদিবাদ থেকে হাল আমলে জঙ্গিবাদের যে মহড়া দেখতে পাচ্ছি তা আমাদের কোন পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলার আগে চলুন শেখ হাসিনার জমানা থেকে একটু ঘুরে আসি।

এখন যেটিকে ফ্যাসিবাদের জমানা বলা হচ্ছে, তা আদিকালে ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের বালাখানার রসালো গল্পে ভরপুর এক মহাকাব্যের ইতিকথা। আজ বাংলাদেশকে ভারত দখল করে নেবে, কাল সিকিম হায়দরাবাদ বানিয়ে ফেলবে। সারা দেশে ২৬ লাখ ভারতীয় গিজগিজ করছে। প্রশাসনের সর্বত্র ভারতীয় ‘র’—এর লোক বসে আছে। শেখ হাসিনা সিকিমের লেন্দুপ দর্জির চেয়েও ভয়ংকর। তিনি ইতোমধ্যে দেশ বিক্রি করে দিয়েছেন— ভারতের সঙ্গে দেশ বিক্রির বহু গোপন চুক্তি হয়েছে এবং দেশের সবকিছু ভারতীয়রা লুটেপুটে খাচ্ছে।

আওয়ামী লীগবিরোধী এবং ভারতবিরোধী উল্লিখিত গল্প যখন পথেঘাটে লুটোপুটি খেত তখন আমরা আতঙ্কে জড়সড় হয়ে পড়তাম। ভারতের অঙ্গরাজ্য হলে ওরা আমাদের গরুর মাংস খেতে দেবে না— সুন্নতে খতনায় বাধা দিয়ে হিন্দু বানানোর চেষ্টা করবে এবং সুযোগ পেলে কচ্ছপের মাংস ও ডিম খাইয়ে ধর্ম বিনাশ করবে। এসব গল্প শুনে আমরা যেমন ইমান—আকিদা এবং বিশেষ অঙ্গের সুন্নতি সুরত নিয়ে ভয় পেতাম তেমনি আমাদের কেউ কেউ স্বপ্নে দেখতেন যে— ভারতের সঙ্গে কোনোমতে একত্র হতে পারলে বলিউডের লাস্যময়ী সুন্দরী নায়িকা রেশমিকা মান্দানার সঙ্গে হাঙ্গা করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।

ভারতবিরোধী উল্লিখিত গল্পের বিপরীতে আওয়ামী লীগও মনোহর সব গল্প দেশজাতিকে উপহার দিত। আওয়ামী লীগ না থাকলে দেশ জঙ্গিতন্ত্রে ভরে যাবে। মৌলবাদীরা দেশকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের জমানায় নিয়ে যাবে। তারা দেশের স্বাধীনতা—সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানাবে অথবা ১৯৭১ পূর্ববর্তী জমানার মতো পাকিস্তানের প্রদেশ বানিয়ে ছাড়বে। মানুষ ভাতের পরিবর্তে কাবুলি পোলাও খাবে অথবা পাকিস্তানি ‘সাইয়্যা দিল মে আনা রে আপকো চেনাজানা  রে— ছমছমাছম’ গানের নায়িকার খোঁজের দিওয়ানা হয়ে ঢাকা—পাকিস্তান সরাসরি বিমান, সমুদ্রপথে সরাসরি জাহাজ সার্ভিস চালু করবে। দলে দলে পাকিস্তানি নায়িকা—গায়িকা নর্তকীরা ঢাকা আসবে এবং চারদিকে ইচিফদানা বিচিকদানা অথবা হাওয়া হাওয়া ও হাওয়া খুশবো লুটিদের শব্দে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কবরে পাঠাবে।

পাকিস্তান ও আফগানভীতির গল্প ছাড়াও আমাদের আমেরিকার ভয় দেখানো হতো। বলা হতো— সেন্ট মার্টিন থাকবে না, পার্বত্য জেলাগুলো আলাদা করে খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানো হবে। বাংলাদেশের তেল—গ্যাসের সব ব্যবসা আমেরিকা ছিনিয়ে নেবে এবং দেশের সব তেল—গ্যাসের খনি দখলের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। তারা আরও বলত, আমেরিকার সৈন্য বাংলাদেশে আসবে এবং আমাদের ছলেবলে কৌশলে মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলে এই দেশটিকে ইরাক—সিরিয়া—লিবিয়ার মতো জীবন্ত দারুল হাবিয়া বানিয়ে ফেলবে।

উল্লিখিত রমরমা গল্পগুলো ২০২৪ সালের মে—জুন মাস পর্যন্ত আমাদের নিদারুণভাবে ভীতসন্ত্রস্ত এবং উত্তেজিত করত। আওয়ামী লীগবিরোধীরা সর্বদা দেশপ্রেমে ছটফট করত এবং ভারতীয় কর্তৃত্ব এবং শেখ হাসিনার বজ্রকঠিন শাসন থেকে মুক্তির আশায় কাজকর্ম ছেড়ে গালিগালাজ— খিস্তিখেউড় এবং অভিশাপ প্রদানকে নিত্যদিনের মুক্তির উপায় হিসেবে বিবেচনা করত। দেশের মধ্যে প্রায় সবাই চুপিসারে গালাগাল করত এবং দেশের বাইরে থেকে যারা প্রকাশ্যে অশ্রাব্য ও অশ্লীল ভাষায় শেখ হাসিনাকে গালি দিত তাদের জাতীয় বীর মনে করে চাতক পাখির মতো নিত্যনতুন গালি শোনার আশায় সামাজিক মাধ্যমে সারাক্ষণ লটরপটর  করত। আর এভাবেই নিয়তির টানে আমরা ২০২৪ সালের জুলাই—আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়ে যাই।

শেখ হাসিনার পতনের এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কিন্তু আমরা রাজনীতি অথবা মার্কেটিংয়ের লোভ দেখানো অথবা ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারিনি। বরং অতীতের গল্পগুলোর চেয়েও ভয়ংকর এবং অলীক সব কাহিনি আমাদের সামনে বলা হচ্ছে আর আমরা অতীতের চেয়েও বেশি ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে গল্পগুলো শুনছি এবং স্বভাবসুলভ হা—পিত্যেশ চিৎকার—চেঁচামেচি করছি। আমি টুস করে ঢুকে পড়ব; এক জালেম গেছে আরেক জালেম আসছে; চাঁদা তুলে পল্টনে, চলে যায় লন্ডনে; টিনের চালে কাউয়া— ড্যাস আমার শাউয়া; এক দুই তিন চার— ড্যাস মিয়ার ড্যাস মার; চাঁদা আনলে পুরস্কার, ধরা পড়লে বহিষ্কার ইত্যাদি গল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ভীতি এবং যাকেতাকে ভারতীয় ‘র’—এর এজেন্ট বলে গালি দেওয়া।

বাজারের টাটকা গল্প হলো, সারা দেশে সিআইএ এজেন্টে গিজগিজ করছে। রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল থেকে সুন্দরবনের গহিন অরণ্য অথবা বান্দরবানের ঘুমধুম থেকে নিউমার্কেটের মুরগিপট্টির জগার সেলুন পর্যন্ত সিআইএর নজরে রয়েছে। তাদের টেক্কা দেওয়ার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দারাও বসে নেই। তারা ওমুক তমুককে এজেন্ট বানিয়ে ফেলেছে। দেশের ভিতরের মধ্যেই আর দেশের বাইরে গদাই র’র এজেন্ট হিসেবে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে এবং তাদের আশ্বাস—প্রশ্বাস পেয়েই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পিলে চমকানো ঝটিকা মিছিল করছে আর আপা বারবার টুস করে ঢুকে পড়ার হুমকি দিচ্ছে।

উল্লিখিত ভীতিকর গল্পের সঙ্গে মানুষেরই বাস্তব জীবনের অভাব অভিযোগ—বেকারত্ব, সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অধঃপতন এবং অশান্তি মিলে পুরো দেশটিকে একটি আশাহীন—স্বপ্নহীন বিশৃঙ্খল ভয়ের রাজ্য বানিয়ে ফেলেছে। ফলে আমরা এখন কোকিলের গান শুনলে আঁতকে উঠি— টিয়া—ময়না—শালিক দেখলে বিরক্ত হই এবং বসন্তের বাতাসে লাশ পোড়া গন্ধের আভাস পাই। আমাদের মনোজগৎ ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে গেছে। আমাদের শরীরে শুধু ক্লান্তি আর অবসাদ ছাড়া কিছুই নেই। স্বপ্নবিহীন জীবন নিয়ে আমরা কোথায় যাচ্ছি এই সাধারণ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সামর্থ্য আমাদের মস্তিষ্ক হারিয়ে ফেলেছে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
   বিষয়:  গোলাম মাওলা রনি   কলাম   মতামত   কলামিস্ট   ভৌতিক কাহিনি  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

শার্শায় পল্লীতে কবরস্থান থেকে ৬টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার
ট্রাইব্যুনালে সেনা মোতায়েন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি
দাউদ ইব্রাহিমের পার্টিতে দুই বলিউড তারকা, নোরা ও শ্রদ্ধা পুলিশের নজরে
সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১৬
আগুন-ককটেল হামলাকারীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিলেন ডিএমপি কমিশনার
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

সাঈদ খোকনসহ ৩জনে বিরুদ্ধে ৫৪ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা দুদকের
ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী সোহানের মৃত্যুদণ্ড
আর মেগা প্রজেক্ট থাকবে না, স্কিল ডেভেলপমেন্টকে গরুত্ব দেবে বিএনপি : আমীর খসরু
রাজশাহীতে বিচারকের বাসায় ঢুকে ছুরিকাঘাতে ছেলেকে হত্যা
ফরিদপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পরিস্থিতি স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু,
মতামত- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাসুদ আলম
প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik$gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝