রাজধানীর মালিবাগে ব্যস্ততম রাস্তায় পাওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে সততা ও পেশাদারিত্বে অনন্য নজীর উপস্থাপন করলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। টাকাগুলো ছিল হলি লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের অনুকূলে টাকাগুলো হস্তান্তর করা হয়। দায়িত্ববান এই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আশিকুর রহমান। তিনি ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)।
ডিএমপি’র মিডিয়া শাখার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৫টার মালিবাগ সোহাগ বাস কাউন্টারের বিপরীতে নূর স্যানিটারি দোকান এলাকায় একটি টাকার বান্ডিল পড়ে থাকতে দেখেন এসআই আশিকুর রহমান। পথচারী ও আশপাশের লোকজনের উপস্থিতিতে বান্ডিলটি তিনি নিজ হেফাজতে নিয়ে গুণে দেখেন, সেখানে মোট ৫০ হাজার ৪১০ টাকা রয়েছে। এসময় তিনি টাকার নোট সংখ্যাসহ একটি তালিকা তৈরি করে মালিকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কাউসার আহম্মেদ (৩৭) নামের এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট থানায় এসে জানান, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর নিজ কর্মস্থল হলি লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে তিনি টাকা হারিয়ে ফেলেন। থানা থেকে এসআই আশিকুর রহমানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে কাউসার আহম্মেদ টাকার পরিমাণ ও বান্ডিলের গঠনসহ বিস্তারিত সঠিকভাবে জানাতে সক্ষম হন। কাউসার আহম্মেদের যথাযথ বর্ণনা ও প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে হলি লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজারসহ আরও কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা এসআই আশিকুরের সঙ্গে দেখা করে হারানো টাকার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে টাকাগুলো কাউসার আহম্মেদের হাতে তুলে দেন এসআই আশিকুর রহমান। এসময় টাকা-পয়সা বহন ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীলতার পরামর্শ দেন তিনি। টাকাগুলো ফেরত পেয়ে কাউসার আহম্মেদ ও মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের শীর্ষ কর্র্মকর্তারা এসআই আশিকুর রহমানের দায়িত্বশীলতা, পেশাদারিত্ব ও সততার প্রশংসা করেন। প্রকাশ করেন আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ জনগণের সেবক। সবসময়ই পেশাদারীত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে। এসআই আশিকুর রহমানের দায়িত্বশীল আচরণ পুলিশের ভাবমর্যাদাকে উজ্জ্বল করেছে। তার এই সততা অন্য কর্মকর্তাদেরকেও অনুপ্রাণিত করবে।
আ. দৈ./কাশেম/খোকন